হযরত খাদিজাতুল কুবরা রাঃ ইন্তেকালে আগে রাসুল সাঃ এর দুই হাত ধরে বললেন- ” আমাকে কথা দিন, আপনার জোব্বা দিয়ে আমার কাফনের কাপড় বানাবেন আর নিজ হাতে আমাকে কবরে নামাবেন এবং সাওয়াল জবাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনি কবরে পাশেই থাকবেন। আমাকে একা রেখে যাবেন না ” রাসুল সাঃ অশ্রুসিক্ত নয়নে বললেন – ” হে আমার প্রিয়তমা স্ত্রী, আমি কথা দিচ্ছি” হযরত খাদিজাতুল কুবরা রাঃ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। গোসল, জানাজা শেষ করে রাসুল সাঃ নিজেই প্রিয়তমা স্ত্রীকে কবরে শুয়াই দিলেন। এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন। প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়ে রাসুল সাঃ পাগলপ্রায় হয়ে পড়লেন। হাবীবের এমন বিমর্ষ মানসিক অবস্থা দেখে আল্লাহ তা’য়ালা হযরত জিবরাইল আঃ কে পাঠালেন। জিবরাইল আঃ এসে সালাম দিয়ে জানতে চাইলেন- হে আল্লাহর রাসুল সাঃ আপনি এভাবে আপনার স্ত্রী’র কবরের পাশে একা দাঁড়িয়ে রইলেন কেন? রাসুল সাঃ বললেন – হে জিবরাইল, আমি আমার প্রিয়তমা স্ত্রীকে কথা দিয়েছি তাঁর সাওয়াল জবাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে ছেড়ে যাব না। হযরত জিবরাইল আঃ বললেন- হে আল্লাহর রাসুল সাঃ আপনি জেনে রাখুন, আল্লাহ তা’য়ালা ঘোষণা করেছেন- হযরত খাদিজা রাঃ কে করা মুনকার-নকীর এর সাওয়ালের জবাব আল্লাহ তা’য়ালা আরশে আযীম থেকে নিজেই দিয়ে দিবেন। ( আল্লাহু আকবর) ইনি হলেন সেই খাদিজা রাঃ যাকে আল্লাহ তা’য়ালা সালাম পাঠিয়েছেন। যেখানে হযরত খাদিজাতুল কুবরা রাঃ কবরের জীবনকে ভয় পেয়েছেন সেখানে আমরা কবরের জীবন নিয়ে চিন্তাও করিনা হযরত খাদিজা রাঃ এর মৃত্যুর পরে, প্রায় প্রতি রাতেই হযরত আয়েশা রাঃ এর ঘুম ভেঙে গেলে উঠে এসে দেখতেন রাসুল সাঃ কান্নারত অবস্থায় আল্লাহর কাছে মিনতি করতেন- ” হে আল্লাহ, যখন শেষ বিচার দিবসে সন্তান বাপকে ছেড়ে চলে যাবে, বাপ ছেলেকে ছেড়ে চলে যাবে। স্ত্রী স্বামীকে চিনবে না, স্বামী স্ত্রীকে চিনবেনা তখন যেন আমি আমার প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজাকে চিনতে পারি। তাঁকে দেখে যেন বিস্তৃত না হই” হযরত খাদিজা রাঃ গোশত খেতে পছন্দ করতেন। যদিও খুব কম সুযোগ হতো। যদি কখনো উট, দুম্বা ও খাসির গোশতের ব্যবস্থা হতো তিনি তৃপ্তি করে খেতেন। রাসুল সাঃ ও খাদিজা রাঃ একে অপরকে খাইয়ে দিতেন। প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর পরে রাসুল সাঃ যখনি কোন গোশত হাদিয়া পেতেন তখনি রাসুল সাঃ একভাগ গোশত সরিয়ে রাখতেন। সেটা একটা পোটলায় ভরে মদিনার রাস্তায় চোখ মুছতে মুছতে হাঁটতেন। প্রিয়তমা খাদিজা রাঃ এর কোন পুরনো বান্ধবীর সাথে দেখা পান কিনা সে আশায়। যখনিই কোন বান্ধবীর দেখা পেতেন তখন গোশতের পোটলাটা তাকে দিয়ে দিতেন। *স্ত্রীর প্রতি রাসুল সাঃ এর ভালবাসা প্রতিটি হালাল সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা বারাকাহ দিন। প্রত্যেক সংসারকে আল্লাহ তা’য়ালা ভালবাসা ও স্নেহের চাদরে আবৃত রাখুক। আমিন। লেখকঃKazi K Rahman Chatgami
রাসুল সাঃ অশ্রুসিক্ত নয়নে বললেন – হে আমার প্রিয়তমা স্ত্রী, আমি কথা দিচ্ছি
