Warning: file_get_contents(/home/abcbarta/public_html/wp-content/uploads/2025/05/og-image-min.png): failed to open stream: No such file or directory in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 185

Warning: imagecreatefromstring(): Empty string or invalid image in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 185

Warning: imagesx() expects parameter 1 to be resource, bool given in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 187

Warning: imagesy() expects parameter 1 to be resource, bool given in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 188

Warning: imagecopy() expects parameter 2 to be resource, bool given in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 192

Warning: imagedestroy() expects parameter 1 to be resource, bool given in /home/abcbarta/public_html/wp-content/plugins/facebook-og-property/facebook-og.php on line 193

এক যে ছিলেন রানী

শেয়ার করুন:

The King can do no wrong অলিখিত সংবিধানের দেশ ইংল্যান্ডে কিছু লিখিত বাক্যের মধ্যে অন্যতম বাক্যে এটি। নিয়মমাফিক রাজতন্ত্র এবং গণতন্ত যে একসাথে চলতে পারে এর জ্বলন্ত উদাহরণ ইংল্যান্ড। বিশ্বে এখন ২৬ টি দেশে রাজা বা রানী আছেন কিন্তু সেখানে কার্যকর গণতন্ত্র নেই। হাজার বছরের ইতিহাসে ব্রিটেনের রাজা বা রানী অনেক ক্ষমতার অধিকারী হলেও বাস্তবে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রধান ছাড়া আর কিছুই নন। তিনি রাজত্ব করেন কিন্তু শাসন করেন না।এজন্যই তো এখনো ব্রিটেনে রাজতন্ত্র টিকে আছে ।ব্রিটিশ সংবিধান মূলত সনদ,আচার,প্রথা,চুক্তিপত্র,আইন ও বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত এবং ঐতিহ্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। ব্রিটিশ সংবিধান একটি মাত্র দলিল নয় বরং তা হাজারো দলিলের মিলিত রুপ। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে গ্রেট ব্রিটেনকে সংসদীয় গণতন্তের জননী বলা হয়। অতীতে তাদের সাম্রাজ্য ছিল প্রায় সমগ্র দুনিয়ায়। বলা হত তাদের রাজত্বে কখনো সূর্য অস্ত যায় না। যদিও আজ ব্রিটিশ রাজ্যে সূর্য অনেক স্থানে অস্ত গেছে। তবুও এর আবেগ আজও চোখে পড়ে। ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যে আয়তন কমলেও প্রায় সারাবিশ্বে তাদের ছোয়া রয়েছে। ক্ষমতা বা শক্তি চিরকাল কারো স্থায়ী হয় না, পরিবর্তিত হয়। রাজা ৮ম হেনরির কণ্যা ছিলেন রানী প্রথম এলিজাবেথ (১৫৩৩—১৬০৩)। তাঁর জীবনের প্রথম আইন সভার অধিবেশনে স্মরণীয় উক্তিটি ছিল “আমার প্রজাদের শুভেচছা ও ভালবাসা ভিন্ন আমার কাছে দুনিয়ার কোন কিছুই মুল্যবান নয়” রাজা প্রথম ও দ্বিতীয় চার্লসের পর আজ তৃতীয় চার্লস রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত কেননা তাঁর মা দ্বিতীয় রানী এলিজাবেথ (১৯২৬—২০২২) আর বেঁচে নেই। ঘটনাক্রমে রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সাধারণত রাজা বা রানী হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের কোন বয়সসীমার রীতি নেই। তাই যদি থাকত তাহলে ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহন করে ৯৬ বছরে শেষ না হওয়া পর্যন্ত উত্তরাধীকারীকে ৭০ বছর অপেক্ষা করে ৭৩ বছর বয়সে গদিতে বসতে হত না।একজনের শেষ আর একজনের শুরু, এ যেন এক মহাকাব্যের ধারা। ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘকাল রাজশাসক রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২০২২ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। কোন মানুষই চিরঞ্জীব নয়। এর আগে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সিংহাসনে বসে ৬৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন মহারানী ভিক্টোরিয়া। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর ডেড বডিকে শ্রদ্ধা জানালেন লক্ষ লক্ষ আপামর জনতা ১১ দিন যাবৎ,অনেক ভিআইপি বা কেউ কেউ ১৪ ঘন্টা ধরে প্রায় ৮ কি:মি: লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষায় থেকে। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে মাত্র ৬ টি দেশের রাস্ট্র ও সরকার প্রধান ব্যতীত সমগ্র বিশ্বের ২০০০ অতিথি মিলেমিশে সেখানে একাকার। উইনস্টন চার্চিল থেকে লিজ ট্রাস পর্যন্ত ১৫ জন প্রধানমন্ত্রীর সারিতে রয়ে গেল তাঁর অমর নাম। ২য় বিশ্বযুদ্ধ থেকে অসংখ্য যুদ্ধ এবং উত্থান পতনের তিনি ছিলেন একজন ইতিহাসের সেরা স্বাক্ষী বা কিংবদন্তী। দ্রুত পরিবর্তনশীল তামাম দুনিয়ায় ব্রিটেনের প্রভাব কমলেও তারপরও তিনি ছিলেন ৩২ টি (বর্তমানে ১৪ টি) স্বাধীন সার্বভৌম দেশের সরকার প্রধান এবং ৫৬ টি কমনওয়েলথ (অতীতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ) ভুক্ত দেশের ২৪০ কোটি জনতার হ্রদয়ের রানী। স্বদেশে এবং বিদেশে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। আজ সারা দুনিয়ায় রাজতন্ত্রের প্রতি মানুষের ধ্যান ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে।কিছুটা বিতর্ক থাকলেও রানীর সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে রাজপরিবারটি হয়ে উঠে “রয়্যাল ফ্যামেলি”। রাজা বা রানীর উপাধি হল “ডিফেন্ডার অব দ্য ফেইথ এ্যান্ড সুপ্রিম গভর্ণর অব দ্য চার্জ অব ইংল্যান্ড”। রানী কমনওয়েলথ ভুক্ত সব দেশেই সফর করেছেন।আমাদের দেশেও তিনি ১৯৬১ এবং ১৯৮৩ সালে সফর করেছেন। রানীর কোন পাসপোর্ট লাগত না কেননা তাঁর মহিমান্বিত নামের পক্ষ থেকে পাসপোর্টধারীর পাসপোর্ট ইস্যু করা হত। কোন প্রকার ট্যাক্স তাঁকে জমা দিতে হত না।তাঁর গাড়ি চালানোর জন্য কোন লাইসেন্স এর প্রয়োজন হত না,এমন কি তাঁকে বহনকারী গাড়ির লাইসেন্স প্লেটও লাগতো না।তিনি ছিলেন যে কোন ধরনের বিচারের উর্ধ্বে। তিনি কোন প্রকার প্রমাণপত্র আদালতে জমা দিতে বাধ্য ছিলেন না।কোনো রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট বা ভোট দিতেন না। পথিবীর যে কোন দেশেই তিনি সফরে যান না কেন তাঁর সংগে থাকত বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী ,বিলাসবহুল হ্যান্ড ব্যাগ ,বিশেষ ড্রেস এবং মণি মুক্তার মত বহু মূল্যের রত্ন। তাঁর মাথার মুকুটটিতে আছে একমাত্র হীরকখন্ড ‘কোহিনুর”। কোহিনূর মানে পর্বতের আলো বা আলোর পাহাড়। ব্রিটিশ জাতীয় সংগীতে পরিবেশিত হত এড়ফ ঝধাব ঃযব ছঁববহ (এখন করহম)। রাজা বা রানীর রাজত্বের ওপর নির্ভর করে কিং বা কুইন। ১৯৫২ সালে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে গীর্জায় রাজকুমারী এলিজাবেথ রাজমুকুট পরে রানী হয়েছিলেন সেখানেই ২০২৩ সালে ১৯ সেপ্টেম্বরে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। রানীর রাজসিক বিদায়ের কেদেঁছে সাড়া বিশ্ব। তিনি পেয়েছেন এমন ভালোবাসা যা পৃথিবীতে বিরল। যাঁকে ধরা যায়নি, দেখা যায়নি, তাঁর জন্য পরিচিত অপিরিচিত মানুষেরা চোখের পানি ফেলেছে মৃত্যু তাকে অমরত্ন দান করেছে। বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া, ব্রিটেনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ,বিশাল কর্মময় জীবনের বর্ণিল অধ্যায়, উপস্থিত অনুপস্থিত কোটি কোটি মানুষের বিনীতভাবে শ্রদ্ধা আর অকৃতিম ভালবাসার পরিসমাপ্তি হয়, বদলে যায় তাঁদের কিছু রীতিনীতি, মৃত্যু এক চিরপরিচিত ভয়ংকর শব্দের সাথে সাথে। সকল আনুষ্ঠানিকতা এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর পারিবারিক নাম লিলিবেট আর পৃথিবীতে রানী গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে রইলেন সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের রয়্যাল ভল্টের চেম্বারে বাবা ষষ্ঠ জর্জ, মা কুইন মাদার, বোন মার্গারেট আর স্বামী প্রিন্স ফিলিপের তথা রাজপরিবারটির সাথে।

শেয়ার করুন: