সময় আসলে বিএনপির সব দাবি পূরণ হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, সময় আসলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে কখন এসব অসমাপ্ত কাজের সমাধান হবে সেটির নির্দিষ্ট কোন দিন-তারিখের ঘোষণা দেননি নজরুল ইসলাম খান। এদিকে বিএনপি নেতাদের এমন আষাঢ়ে গল্পে সাধারণ মানুষ আর বিশ্বাস করে না এবং আন্দোলন দীর্ঘায়িত করে নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতে নেতারা এমন অনির্ধারিত সময়কালের কথা উল্লেখ করেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা।
বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন এবং তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে বিএনপি বরাবর কালক্ষেপণ করেছে। বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে সিনিয়র নেতারা তৃণমূল কর্মীদের দীর্ঘদিন ধরে আশ্বাস দিয়ে আসছে। নেতারা প্রায়শই বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে এসে বিএনপির হাল ধরবেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় যাবে। তবে বাস্তাবিক চিত্র ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে দণ্ডিত হওয়ায় তারেক রহমানের পক্ষে দেশে ফেরাটা অসম্ভব। কিন্তু নেতারা বিএনপিকে বাঁচিয়ে রাখতে দিনের পর দিন তৃণমূল কর্মীদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এসেছেন। এছাড়া দুর্নীতির দায়ে বেগম জিয়া জেল হাজতে রয়েছেন। সহসাই তিনি মুক্তি পাবেন না বলেও বিশ্বাস করেন বিএনপির নেতারা। এরপরও কোন একদিনের আশায় দলটি প্রেস ব্রিফিং করে টিকে আছে। এদিকে নির্বাচনের পূর্বে দলীয় ভঙ্গুর অবস্থা, দলীয় কোন্দলে জর্জরিত বিএনপির তৃণমূল নেতারা হতাশ হয়ে দলবিমুখ হয়ে পড়ছেন। গোপনে অনেকে দলত্যাগ করে অন্য দলে যোগদান করছেন। আন্দোলনে দীর্ঘায়িত করা, বিভক্তি ও সঠিক নেতৃত্বদানে ব্যর্থতার কারণে দলটির তৃণমূলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিএনপির আন্দোলন দীর্ঘায়িত করার বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাম নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শুনছি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের শাস্তির বিষয়ে আন্দোলন করে সরকারকে সঠিক পথ দেখাবে বিএনপি। দিন যায়, উৎসব যায় কিন্তু বিএনপির আন্দোলনের সময় নির্ধারিত হয় না। আসলে দলটি আন্দোলনের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। নেতা-কর্মীরা বাস্তবতা দেখে দণ্ডিত আসামীদের জন্য আন্দোলন করতে রাজি না। কালক্ষেপণ করায় সিনিয়র নেতাদের কথাকে বিশ্বাস করে না তৃণমূল কর্মীরা। আন্দোলন না করতে করতে দলটির কর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে পড়েছে। দলের কর্মীরা সিনিয়র নেতাদের কর্মকাণ্ডে হতাশ। তারা না পারছে দলীয় নেত্রীকে মুক্ত করতে, না পারছে দলের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। পুরোপুরি হ.য.ব.র.ল অবস্থা। ভাবতেই অবাক লাগে, সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিএনপি কিভাবে আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখে। বিএনপি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। কালক্ষেপণ করে দলটি আজ হতাশাগ্রস্তদের দলে পরিণত হয়েছে। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ব্যাপারে বিএনপি সরকারকে চাপে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।