নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন সাবেক এমপি মা-মাটি ও নিপীড়িত মানুষের নেতা পাবনা জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আজিজুল হক আরজু। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে নিজের মনোনয়ন পত্র জমা দেন তিনি।
এ সময় তাঁর সাথে আরও ছিলেন পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ও সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাব।
এই নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা বলেন, বিগত নির্বাচনগুলো থেকে এবারের নির্বাচন হবে ভিন্ন ও প্রতিযোগিতামূলক। এই নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীরা তাদের মুল্যায়ন পাবেন। তাই আমরা আমাদের প্রিয় নেতা পাবনা-২ আসনের অভিভাবক খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত করেছি এবং মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছি। আমরা বেড়া-সুজানগরের সাধারণ জনগণের আস্থার প্রতীক খন্দকার আজিজুল হক আরজুর জয়ের মালা নিয়েই ফিরবো।
পাবনা জেলার সুজানগর ও বেড়া উপজেলার আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত পাবনা-২ আসন। কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলে পাঁচ বার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে এ আসনে পাঁচ বার আওয়ামী লীগ, তিন বার বিএনপি এবং একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আহমেদ ফিরোজ কবির বিএনপির এ কে এম সেলিম রেজা হাবিবকে হারিয়ে এই আসনে নির্বাচিত হন। এই আসনে মোট ভোটার প্রায় সাড়ে তিন লাখ। আসনটিতে আওয়ামীলীগের অবস্থান আগে থেকেই ভালো। অনেক দিন ধরে এই আসন হাতছাড়া বিএনপি’র। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বড় অভিযোগ, বর্তমান সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির নির্বাচিত হবার পর থেকেই দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে রেখেছেন। যা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। নেতৃত্বের যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষমতা না থাকে, প্রজ্ঞা ও সাহস না থাকে, তাহলে সংকট তীব্র পর্যায়ে যায়। নেতৃত্ব যদি অর্বাচীনের মতো কারও পাতা ফাঁদে পা দেয়, তাহলে তো তার পরিণাম ভয়াবহ হতে বাধ্য। নেতা জনগণকে নেতৃত্ব দেবে নাকি জনগণের নির্দেশ মতো চলবে- এ এক বিতর্কই বটে! এমনই এক সংকটের মুহূর্তে পাবনা-২ আসনের জন্য অনিবার্য একটি নাম সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু।
শৈশব থেকেই প্রিয় বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করেন তিনি। কিশোর বয়সের যে সময়টায় সবাই ব্যক্তিগত প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে অভিমান-অনুযোগে ব্যস্ত সে সময়েই তিনি ব্যক্তিগত গন্ডির বাইরে ভাবতে শিখেছিলেন। তাঁর এই আবেগ এবং ত্যাগ তাঁকে যেমন মানবপ্রেমে উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি নিত্য নতুন ভাবনায় বিভোর করেছে। তাঁর ভাবনায় নির্মিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য ‘শেকড় থেকে শিখরে’ বেড়া ও পাবনার গন্ডি পেরিয়ে ইতোমধ্যে সারাদেশেই প্রশংসিত ও অনুকরণীয় হয়েছে।
স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী অশুভ শক্তি যখনই প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছে, বিদ্রুপাত্মক স্লোগানে কলুষিত করার চেষ্টা করেছে, ঠিক তখনই রুখে দাঁড়িয়েছে খন্দকার আজিজুল হক আরজুর কণ্ঠ। সৎ সাহস, প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর দারুণ দক্ষতার সমন্বয়ে দুস্কৃতিকারীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। বিশ্বায়নের যুগে মাঠের প্রতিযোগিতায় এমনকি মেধা ও মননের প্রতিযোগিতায়ও এগিয়ে রয়েছেন খন্দকার আজিজুল হক আরজু।
খন্দকার আজিজুল হক আরজু ০৭-০৪-১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত খন্দকার জনাব আলী ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি ১৯২১ সালে কলকাতার হুগলিতে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৬৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। খন্দকার আরজুর মাতা মৃত সৈয়দা মাহফুজন্নাহার বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী। ৫ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে খন্দকার আরজু চতুর্থ। তাঁর বড় ভাই মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফজলুল হক জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতা ছিলেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে চাকরী করতেন তিনি। বিএডিসি’র শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতিও ছিলেন। তাঁর মেজো ভাই বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডক্টর খন্দকার বজলুল হক দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন ব্যক্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের ইমেরিটাস টিচার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য, কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পরপর দুইবার নির্বাচিত সভাপতিসহ অগ্রণী ব্যাংক লি. এর দুইবারের চেয়ারম্যান ও পিএসসি’র সদস্যও ছিলেন।
খন্দকার আজিজুল হক আরজু’র সেজো ভাই খন্দকার মাজেদুল হক বিসিআইসি’র সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ধোবাখোলা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ছিলেন। তাঁর ছোট ভাই খন্দকার সিরাজুল হক একজন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে তিনি বাড়িতে ব্যবসায় নিয়োজিত আছেন। তাঁর ৩ বোন স্ব-স্ব অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত।
খন্দকার আরজুর প্রাথমিকের পাঠ শুরু হয় নাটিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপরে ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী ধোবাখোলা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করে বাণিজ্য বিভাগে ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
১৯৬৯ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ ছিলেন। তাঁর মুক্তির সংগ্রামে গড়ে উঠা আইয়ুুববিরোধী আন্দোলনে সে সময় কিশোর বয়সী খন্দকার আরজু নিজেই আইয়ুব খানের ছবি অংকন করে সামনে ধরে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে সকলের নজর কাড়েন। ওই বছরেই ধোবাখোলা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং কলেজ শাখা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর মহসিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে মহসিন হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এজিএস নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে তিনি জিএস পদে নির্বাচন করেন। এসময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল ত্যাগ করে জাসদ ছাত্রলীগ আখতার-বাবলু ও মনির-হাসিব নামে পরিষদ জাসদ ছাত্রলীগ বিভক্ত হলে জাসদ ছাত্রলীগ তথা রাজনীতি থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোনিবেশ করেন। উল্লেখ্য, মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করে এসে ধোবাখোলা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হয়েও প্রথম হন। ১৯৮৪ সালে নরসিংদী মাধবদীতে খন্দকার আরজু চার বন্ধু একত্রে টেক্সটাাইল টুইস্টিং মিল প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা আরম্ভ করেন। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত এই ব্যবসা পরিচালনা করার পর টেক্সটাাইল ব্যবসা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে পরিবারের চাচাতো ভাই খন্দকার মোশাররফ হোসেন পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। শহীদ হন সহোদর প্রফেসর খন্দকার বজলুল হকের স্ত্রী সৈয়দা আফ্রিনা বেগম, শহীদ হন মামা সৈয়দ আবুল হোসেন। ১৯৮৯ সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। একমাত্র কন্যা একজন চিকিৎসক; বর্তমানে গ্রীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
রাজনীতির পাশাপাশি খন্দকার আরজু সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন। আত্মমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখছেন এই সব সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত শহীদ নূরুল হোসেন ক্লাবে তিনি ১৯৭৬ সালে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। পাবনা জেলা মোটর মালিক সমিতিতে ৯ বছর একটানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এই সমিতির সভাপতি হওয়ার পূর্বে এ প্রতিষ্ঠানটি ছিল দূর্নীতি ও লুটপাটের কারখানা। তিনি সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরে ২ তলা ভবন নির্মাণ, এসি হলরুমসহ অফিস স্থাপন এবং সমিতির নিজস্ব বাস সার্ভিস চালু করেন। এছাড়াও তাঁর সময়কালে তিনি ৩০ লক্ষ টাকার অধিক জামানত জমা করেন।
খন্দকার আরজু বিভিন্ন সময়ে যতগুলো সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন, তাঁর সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সবগুলো প্রতিষ্ঠান আজ বুক উঁচু করে উন্নয়নের শিখরে অবস্থান করছে; আর্থিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন তিনি। যার স্বাক্ষর মেলে নগরবাড়ি নটাখোলা বণিক সমিতির তিন তলা ভবন। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি নিজে জমি দান করেছেন।
বিগত ১১ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন নগরবাড়ি ঘাট নলখোলা বাজার বণিক সমিতিতে। তিনি সভাপতি হওয়ার বহু আগে প্রতিষ্ঠিত হলেও কোন অর্থ উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পরে নিজে যাবতীয় উন্নয়ন ও লক্ষ লক্ষ টাকা স্থায়ী জামানতসহ নগদ অর্থ ব্যাংকে জমা করেন।
শহীদ আবু বকর স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠা থেকে অদ্যাবধি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। নাটিয়াবাড়ি-রাজনারায়নপুর ঈদগা নতুনভাবে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে গত ১৪ বছর তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন ও উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। রাজনারায়নপুর কবরস্থানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলা বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম অর্জনের উপর দেশের একমাত্র সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য ‘শেকড় থেকে শিখরে তাঁর অনন্য অসাধারণ এক সৃষ্টি; যা তিনি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেন।
তিনি বিভিন্ন সময়ে ধোবাখোলা করোনেশন হাই স্কুল এন্ড কলেজ, কাশিনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মাশুন্দিয়া ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজ, সুজানগর এনএ কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দুলাই ডা. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজটি তার সময়কালে সরকারিকরণ হয়। মাশুন্দিয়া ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজের কোন ফান্ড ছিল না, কলেজ মসজিদ ছিল না, সীমানা প্রাচীর ছিল না। একাডেমিক ভবন স্বল্পতাসহ চেয়ার-টেবিলও ছিল অপ্রতুল। সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি সবকিছুর সুব্যবস্থা করেছেন। নিজ উদ্যোগে কলেজ ফান্ড গঠন করেছেন।
তিনি জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করাকালীন পারিবারিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও প্রগতির ধারায় বিশ্বাসী হয়ে ১৯৭৩ সালে নির্বাচনে ১৯৭৯ সালে জিয়ার অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আহমেদ তফিজ উদ্দিন এর পক্ষে কাজ করেন এবং বেড়া অংশের ৫ টি ইউনিয়নের নির্বাচনী সকল দায়দায়িত্ব তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বদানকারীদের সাথে নিয়ে সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহমেদ তফিজ উদ্দিনের পক্ষে কাজ করেন। ২০০১ এ মির্জা জলিল, ১৯৯৬ সালে আহমেদ তফিজ উদ্দিন ও ১৯৯৮ সালের উপনির্বাচনে এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকারের পক্ষে কাজ করেন এবং সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালের এরশাদ পতনের পূর্বে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী কেন্দ্র ঘেরাও করে ভোট কেন্দ্রে ভোট কেটে নেওয়ার ফলে নির্বাচনে জয়লাভ করতে ব্যর্থ হন।
১৯৯০ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হতে শুরু করে বিভিন্ন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে সক্রিয় হন। বর্তমানে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে বেড়ার ৫ টি ইউনিয়নের আর্থিক খরচাদির দায়িত্বসহ সকল নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করায় যতবার পরাজিত হয়েছেন (১৯৯৬, ২০০৮ ছাড়া) প্রতিটি নির্বাচনের পর হামলা-মামলা-নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করছেন। শুধু তাই নয়, নির্বাচনী এলাকা পাবনা-২ এর প্রতিটি নেতাকর্মীর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, কারামুক্তির জন্য আইনি লড়াই, এমনকি পলাতক কর্মীদের থাকা-খাওয়াসহ সকলপ্রকার সহযোগিতা করেছেন খন্দকার আরজু।
২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে বেড়া উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ৫ বছর শতভাগ সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত এম.পি নির্বাচিত হয়ে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন শেষে মেয়াদ পূর্ণ করে এমপি নির্বাচনে যাবার সময় তিনি বেড়া উপজেলায় রেখে যান ৩ কোটির উপরে ক্যাশ, যা ছিল এক অনন্য উদাহরণ। যখন কোনো উপজেলায় লাখ টাকা সঞ্চয় ছিলো না, জুন ক্লোজিং এর সময় যত টাকাই ফান্ড থাকুক না কেন, তার সবই যেনতেনভাবে বিল-ভাউচারে শেষ হবার কালচারের সময় তিনি এমন কাজটি করে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেড়া-সুজানগরের তৃণমূল আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বেড়া-সুজানগর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশ ও দশের জন্য নিজেকে পুনরায় নিয়োজিত করতে যাচ্ছেন।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে খন্দকার আজিজুল হক আরজু বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক; তাঁর স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আ.লীগের মনোনয়ন না পেয়ে আমি নির্বাচন করতে চাইনি। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজ দলের নেতারাও স্ব-স্ব জনপ্রিয়তায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন ও আমার নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের চাপের মুখে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্র জমা দিয়েছি। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে দেশ ও জনগণের সেবা করে যেতে চাই।