বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ মোট ২৭টি রাজনৈতিক দল এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, যাদের অধিকাংশের সাংগঠনিক কার্যক্রম খুব একটা দেখা যায় না।
এর মধ্যে তিনটি দল এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- তৃণমূল বিএনপি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএম এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বা বিএসপি।
এর মধ্যে বিএনএম ও বিএসপি এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখেই গঠন করার কারণে বেশ আলোচনায় এসে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে।
ওদিকে দেশে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিসহ বেশ কিছু দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ নির্বাচন বর্জন করছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর দাবি বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বর্জন করছে।
প্রসঙ্গত, আগামী সাতই জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ দলটির রাজনৈতিক ও কৌশলগত মিত্ররাই প্রধানত এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলছেন যেসব দল অংশ নিচ্ছে তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া আর কারও বড় পরিসরে ভোট ব্যাংক নেই।
“তবে এখানে অনেক দল আছে যাদের হয়তো সংগঠন দুর্বল কিংবা ভোট ব্যাংক নেই কিন্তু তারা বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
এর উদাহরণ হিসেবে মি. কলিমউল্লাহ বলছেন যে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে তাদের নাম এ বিষয়ক সার্চ কমিটির কাছে এসেছিলো এনপিপি নামক একটি দলের কাছ থেকে, যা সে সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলছেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে যে দলগুলো মাঠে এসেছে তাদের আসলে সারা দেশে দেখা যাবার কোন কারণ ঘটেনি। শীর্ষনেতাদের আসনগুলোতে তাদের কিছু লোকজন দেখা যাচ্ছে।
“বামপন্থী দলগুলো জনগণের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই সম্পৃক্ত। লোকে তাদের ভোট কেন দেয় না তা অন্য আলোচনা। এক্ষেত্রে ভোটারদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির মানের ব্যাপারটা মাথায় রাখা যেতে পারে। আর ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতাদের, ভক্ত-আশেকান-মুরিদান যত আছে তত সংখ্যক ভোটার আছে বলে মনে হয়না,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের দেয়া হিসাব অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলো হলো- ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যালনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি), বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, সুপ্রিম পার্টি, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ওয়ার্কার্স পার্টি ও সাম্যবাদী দল।