প্রায় তিন দশক পর আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঝিমিয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। সব ছাত্র সংগঠনই ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক কোন আশঙ্কা নেই ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে।
ডাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় জমজমাট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা। আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন পাওয়ার পাশাপাশি তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়তেই চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা। প্রতিটি হলে আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের সামনে ইশতেহার আর প্রতিশ্রুতির ডালি তুলে ধরছেন তারা। আর সঠিক প্রার্থীকে বেছে নেয়ার প্রচেষ্টায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা, হলে হলে পড়ার টেবিল কিংবা চায়ের আড্ডায়, শিক্ষার্থীরা হিসাবই কষছেন, কাকে পাবেন তারা চাওয়া-পূরণের লড়াইয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি পদের বিপরীতে লড়বেন নয়জন। এর মধ্যে সহসভাপতি বা ভিপি পদে ২১ ও সাধারণ সম্পাদক বা জিএস পদে রয়েছেন ১৪ জন। সব মিলিয়ে ২৫টি পদের বিপরীতে মোট ২২৯ জন রয়েছেন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এক শিক্ষার্থীকে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৩টি পদে মোট ৩৮টি ভোট দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদে ২২৯ প্রার্থীর মধ্য থেকে ২৫ জনকে এবং হল সংসদে গড়ে ৩০ জনের মধ্য থেকে ১৩ জনকে প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন ভোটাররা। ভোট গ্রহণ চলবে আগামী সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, ডাকসু ও হল সংসদের মোট ভোটার ৪৩ হাজার ২৫৬ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে প্রার্থী রয়েছেন ৭৩৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ পদের বিপরীতে ২২৯ জন এবং হল সংসদে ১৩টি করে ২৩৪ পদের বিপরীতে ৫০৯ জন।
বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন ডাকসুর ইতিহাসে নতুন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। নব্বইয়ের পর সুদীর্ঘ ২৮ বছরের নির্বাচনবিহীন পরিবেশ নতুনভাবে জেগে উঠছে। আগামী ১১ মার্চ ছাত্র রাজনীতিতে আবারও পুরনো ঐতিহ্য ফিরে আসবে, ছাত্রছাত্রীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে, প্রশাসনের অচলায়তন ভেঙে নতুন করে প্রাণ পাবে। সে আশা এবং প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা।