অর্থ পাচার রোধ ও কর আদায় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত

শেয়ার করুন:

দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ বেতনভুক্ত বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত করে অর্থ পাচার প্রতিরোধ এবং আয়কর আদায় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে কর না দেওয়ার অপরাধে সংশ্লিষ্ট বিদেশিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি বাস্তবায়নে যৌথভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) ও বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (বিডা) প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সম্প্রতি ‘মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির’ বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

দেশে কতজন বিদেশি নাগরিক বৈধ বা অবৈধভাবে কাজ করছেন, এর প্রকৃত পরিসংখ্যান সরকারি ও বেসরকারি কোনো পর্যায়ে সুনির্দিষ্টভাবে নেই। তবে এ বিষয়ে গবেষণা করেছে ট্রান্সপারেন্সি অব বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির গবেষণায় বলা হয়, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, আন্তর্জাতিক এনজিও, তৈরি পোশাকশিল্প, বেসরকারি অফিস প্রতিষ্ঠান, নামিদামি হোটেল ও রেস্তোরাঁর মতো খাতে কাজ করছেন কমপক্ষে আড়াই লাখ। কর্মরত এসব নাগরিক প্রতিবছর অবৈধভাবে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন। তাদের অনেকে কর ফাঁকি দিচ্ছেন আবার অনেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করে কোনো কর না দিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে প্রতিবছর সরকার প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?client=ca-pub-9589667218503970&output=html&h=280&adk=3357041251&adf=3482789770&pi=t.aa~a.1029901795~i.4~rp.4&w=726&fwrn=4&fwrnh=100&lmt=1666522800&num_ads=1&rafmt=1&armr=3&sem=mc&pwprc=4769619420&ad_type=text_image&format=726×280&url=https%3A%2F%2Fwww.jugantor.com%2Ftodays-paper%2Ffirst-page%2F608308&fwr=0&pra=3&rh=182&rw=726&rpe=1&resp_fmts=3&wgl=1&fa=27&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTAuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTA2LjAuMTM3MC41MiIsW10sZmFsc2UsbnVsbCwiNjQiLFtbIkNocm9taXVtIiwiMTA2LjAuNTI0OS4xMTkiXSxbIk1pY3Jvc29mdCBFZGdlIiwiMTA2LjAuMTM3MC41MiJdLFsiTm90O0E9QnJhbmQiLCI5OS4wLjAuMCJdXSxmYWxzZV0.&dt=1666522800901&bpp=3&bdt=1384&idt=-M&shv=r20221019&mjsv=m202210130101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D117a2aa4b0ec7dcd-221d13462ed500aa%3AT%3D1642232373%3AS%3DALNI_MY_t9UuxkrKKEsGgZvgJSwjBCrT1Q&gpic=UID%3D00000517978342a1%3AT%3D1651302243%3ART%3D1666522703%3AS%3DALNI_MayYeR5-S-mfjARCoSuqslPXYUQiw&prev_fmts=0x0%2C1200x280&nras=3&correlator=7995714267989&frm=20&pv=1&ga_vid=1402700669.1642232374&ga_sid=1666522800&ga_hid=1192248371&ga_fc=1&u_tz=360&u_his=10&u_h=768&u_w=1366&u_ah=728&u_aw=1366&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=105&ady=1615&biw=1349&bih=657&scr_x=0&scr_y=397&eid=44759875%2C44759926%2C44759837%2C44761793%2C42531705%2C44775017%2C44776447&oid=2&pvsid=1147989020237048&tmod=700842108&wsm=1&uas=0&nvt=3&eae=0&fc=1408&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1366%2C0%2C1366%2C728%2C1366%2C657&vis=1&rsz=%7C%7Cs%7C&abl=NS&fu=128&bc=31&ifi=3&uci=a!3&btvi=1&fsb=1&xpc=7zzgCXja1j&p=https%3A//www.jugantor.com&dtd=48

মানি লন্ডারিং-সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠকে বিদেশি নাগরিকদের অর্থ ও কর ফাঁকি, ভিসা ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে অবৈধভাবে চাকরির বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিদেশি নাগরিকরা কর দিচ্ছে, অবৈধভাবে বিদেশে টাকা পাঠাচ্ছে-এ বিষয়ে কয়েকটি ঘটনা শনাক্ত করে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি এসব ঘটনার ব্যাপারে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি কর আদায়ের স্বার্থে বিদেশি নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় তথ্য এনবিআরকে দিয়ে সহায়তা করতে বলেন গোয়েন্দা সংস্থা এসবিকে।

অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, আইন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিএফআইইউ প্রতিনিধি অংশ নেন।

বৈঠকে আরও বলা হয়, অনেক বিদেশি নাগরিক সাধারণত ভ্রমণ বা অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তী সময়ে কাজ করার অনুমতি না নিয়েই চাকরিতে যোগ দেন। অনেক ক্ষেত্রেই তারা যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেখানের নথিপত্রে বিদেশি কর্মী উল্লেখ থাকে না। এদিকে নজর কম থাকায় সংশ্লিষ্ট এসব নাগরিকের কাছ থেকে আয়কর আদায় করা যাচ্ছে না।

জানা যায়, বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ ও চাকরি করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব ও নীতিমালা বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ না থাকার কারণে যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, সেখানে তাদের প্রকৃত বেতন গোপন করা হচ্ছে। এছাড়া একজন বিদেশি নাগরিক সিইও হিসাবে প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ হাজার ডলার বেতন পেলেও কাগজপত্রে সেটি দেখানো হচ্ছে মাত্র তিন থেকে চার হাজার ডলার। দেশে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্তৃপক্ষও নেই। ফলে বিদেশি কর্মীদের আসা-যাওয়ার নজরদারি রাখা, নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা পরীক্ষা এবং অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠছে।

জানা যায়, আয়কর ফাঁকি দিতে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ কর্তৃপক্ষ প্রকৃত বেতনের একটি অংশ বৈধভাবে দিলেও সিংহভাগই অবৈধভাবে নগদ দেওয়া হয়ে থাকে। আর অবৈধভাবে কাজ করা কর্মীদের পুরো বেতনই নগদ অথবা অন্য কোনো দেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া কর্মীদের হাতখরচ, আবাসন, পরিবহণ ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, দেশে কর্মরত বিদেশিদের অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি রোধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আমরা জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে এ নিয়ে গবেষণা করেছি। অনেক এনজিওর মাধ্যমে বিদেশি নাগরিক দেশে কাজ করছেন। অনেক এনজিও এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, তা গবেষণায় উঠে আসছে। এখন সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ বিষয়ে আরও খতিয়ে দেখবে বলে আমি আশা করছি। তিনি আরও বলেন, মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে বড় অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, এটি শনাক্ত করেছে সিআইডি। এতে প্রমাণ হয়, দেশের অনেক সংস্থার সক্ষমতা আছে। তাদের কাজে লাগাতে হবে। যাতে বিদেশি কর্মীদের মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার বন্ধ করা যায়।

শেয়ার করুন: